Reviewed By : Souvik Saha
কল্লোল লাহিড়ির লেখা উপন্যাস থেকে নির্মিত hoichoi এর এই নতুন সিরিজ ইন্দুবালা ভাতের হোটেল ( Indubala Bhaater Hotel Web Series Review) , পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য ।
সত্যি আমরা দেশভাগ দেখিনি, ৭০ এর দশক দেখিনি; কিন্তু যারা দেখেছে। যারা নিজেদের মাটি ছেড়ে চলে এসেছেন বা আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের যন্ত্রনা টা বোঝা হয়তো এতটা সহজ নয়। ধরুন আপনার নিজের বাড়িতে কেউ যদি আপনাকে অতিথির মতন খাতির করে, মানে আপনাকে ভালো মন্দ খাওয়ানো হবে, আপ্যায়ন করা হবে, সব ঠিক আছে; কিন্তু তাদের ভালো মন্দে কথা বলার অধিকার আপনার নেই, তাহলে আপনার যেমন মনে হবে, যারা কাঁটাতার পেরিয়ে অন্য দেশে চলে এসেছিল তাদের অনুভূতিটা নিজের দেশে গেলে ঠিক সেই রকম।
ইন্দুবালা এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসেছিলো বিয়ের পর | এ তো প্রতিটি মেয়েরই গল্প ,, বিয়ের পর নিজবাস থেকে কখনো ভিনদেশ, ভিনরাজ্য, ভিনজেলা বা ভিনশহর আসলে পরবাসে ঠাঁই | তাড়া করে বেড়ায় বিয়ের আগের মায়ের কোলের ছায়া, হাতের রান্না বা পরম যত্নে খাইয়ে দেওয়া, বাবার আহ্লাদ বা মৃদু বকুনিতে শাসন সবটাই যেন ভীষণ আদুরে | একদম যেন খাঁচার বাইরের পাখির মতো বন্দিহীন ঝর্ণার ন্যায় জীবন | আসলে ওই যে বিয়ের পরে ভালো বা মন্দ থাকা তো ক্ষেত্রবিশেষে আলাদা আলাদা হয় কিন্তু বিয়ের আগের জীবনের যে আহ্লাদ সে আর কখনো মেয়েদের জীবনে ফিরে আসেনা | সে সবই তখন ভিনদেশি তাঁরা |
পুরো সিরিজটায় আছে এক লড়াইয়ের গল্প। জীবনের সাথে লড়াই, সমাজের সাথে লড়াই, নিজের সাথে লড়াই, আর সব থেকে মারাত্মক নিজের স্মৃতির সাথে লড়াই। আরো একটা ব্যাপার শেখায় এই সিরিজটা, সেটা হল কে আপন, আর কে পর তার ব্যবধান।
প্রথমেই বলবো শুভশ্রী গাঙ্গুলির কথা। ইন্দুবালার চরিত্রে অসাধারণ অনবদ্য অভিনয় করেছেন তিনি। সময়ের সাথে সাথে এই ভদ্রমহিলা যেভাবে নিজেকে ভেঙেছেন তা সত্যিই অসাধারণ । বিশেষত,এখানে আমি বলবো বৃদ্ধার যে গলা টা করেছেন কিছু উচ্চারণগত ত্রুটি কানে লাগে। ইন্দুবালার স্বামী, রতনলাল মল্লিকের চরিত্রে প্রতীক দত্তের অভিনয় চলনসই। পার্শ্ব চরিত্রে বাকিরাও বেশ ভালো। সিরিজের গল্প, সিনেম্যাটোগ্রাফি, আলোর কাজ সব কিছু অনবদ্য। আর একটা কথা না বললেই নয়, তা হল এই সিরিজের গান গুলো।
অনেকদিন পর hoichoi তে একটা কাজ এলো যেটা নিয়ে মানুষ অনেকদিন কথা বলবে এবং আগামী দিনেও কথা হবে। এমন কাজ সত্যিই মনে দাগ কেটে যায়।
GIPHY App Key not set. Please check settings