Reviewed By : Souvik Saha
পরিচালনা: পীযুষ সাহা
অভিনয়ে: প্রিন্স, পায়েল সরকার, দর্শনা বণিক, জুন মালিয়া ,দীপঙ্কর দে
অবশেষে মুক্তি পেলো বিখ্যাত উপন্যাসিক সমরেশ মজুমদারের থ্রিলার কাহিনী অবলম্বনে পীযূষ সাহা পরিচালিত বাংলা চলচ্চিত্র জালবন্দী। । ছবিতে রয়েছেন নবাগত প্রিন্স (Prince ),দর্শনা ,পায়েল । এছাড়াও আছেন পাম্পি ,জুন মালিয়া ,দীপঙ্কর দে এবং খরাজ মুখার্জী । সিনেম্যাটোগ্রাফি গোপী ভাগত । ছবির সঙ্গীতে ছিলেন অমিত ঈশান । প্রযোজনা করেছে প্রিন্স এন্টারটেইনমেন্ট পি৪ ।
বরাবর মনে হতো সাউথ এর ইন্ডাস্ট্রি গুলোর মতো আমাদের এখানে নতুন মুখ কেনো দেখা যায় না , বাংলায় কি সেইরকম কোনো নতুন মুখ নেই যারা বাংলা সিনেমা র ভার বহন করে এগিয়ে নিয়ে চলতে পারে। বেশ কিছু বছর ধরে মনে হয়েছিল হয়তো সত্যি নেই, কিন্তু সেটা আবারও ভুল প্রমাণ করলেন ডিরেক্টর পীযূষ সাহা । আগের মতন উনি আবার এক নবাগত কে নিয়ে ছবি বানালেন সেটাও ওনার পরিচিত ছক এর বাইরে গিয়ে । জালবন্দি সিনেমা টা কাল দেখতে বসে বারবার মনে হচ্ছিল না আমরাও পারি , দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি দের সাথে পাল্লা দিয়ে লড়াই করতে।
‘জালবন্দী’ (Jaalbandi Movie Review ) ছবির গল্প এক তরুণ মধ্যবিত্ত যুবক অনীশের। বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর সম্পূর্ণ পৃথিবী ওলট-পালট হয়ে গেলে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এক ইনশিওরেন্স কোম্পানীর বীমা এজেন্ট হিসাবে কাজ করা শুরু করতে হয় তাকে। সমস্ত স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে টার্গেট পূরণের সংগ্রামে টিকে থাকতে একের পর এক অযাচিত পরিস্থিতির জালে জড়িয়ে পড়ে অনীশ। শেষ অবধি এই জাল ছিঁড়ে সেই সাদা-সিধে ছেলেটা বেরোতে পারল কিনা তারই গল্প জালবন্দী।রুদ্ধশ্বাস ,ভিন্ন স্বাদের রহস্য ,রোমাঞ্চ ও সম্পর্কের নানান পাটিগণিতে ভরপুর ‘সমরেশ মজুমদারের’ এই রহস্য উপন্যাস জালবন্দী অবলম্বনে পীযুষ সাহার নতুন ছায়াছবি ‘জালবন্দী’।
প্রিন্সের প্রথম ছবি হলেও প্রশংসনীয় তাঁর অভিনয় ।প্রথম সিনেমায় নিজের চরিত্র কে ফুটিয়ে তুলতে কোনো কসরৎ বাকি রাখেনি সে, নবাগত হয়েও হিরো র লাইম লাইট থেকে বেরিয়ে এসে সংসার এর সাড়াশি চাপ একটা ছেলের দিন গুজরান করার চরিত্র টা সত্যিই খুব ভালো করে ফুটিয়েছে আমাদের এই নবাগত, প্রথম সিনেমা এই সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রিন্স কে কুর্নিশ।
বাকি অভিনেতারা ও সপ্রতিভ, খরাজ মুখার্জী র কমেডি টাইমিং বা দীপঙ্কর বাবুর অভিনয় নিয়ে বাঙালি টা প্রশ্ন তোলে না, সেই ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠার কথা ও নয়।দর্শনার অভিনয় সাবলীল ,পায়েল খুব ভালো কিছু জায়গায় ,রণজয় বেশ ভালো ,জুন মালিয়া ঠিকঠাক
এবার আসি নেগেটিভ দিকে, সমরেশ মজুমদার এর গল্প নিয়ে কিছু বলার মত সাহস অনেক লোকের নেই, সত্যি বলতে আমার ও নেই, তবে টান টান গল্পের মাঝে ফোড়ন কাটে গল্পের স্ক্রিপ্ট, আর একটু স্মার্ট হতেই পারতো স্ক্রিনপ্লে র কিছু অংশ, প্রিন্স এর মধ্যে ও আঁটোসাঁটো ভাব টা মাঝে মধ্যে লক্ষ্য করা গেলো, যদিও সেটা প্রথম সিনেমা বলে হওয়া টা স্বাভাবিক, এই কয়েকটা জিনিস যদি একটু সরিয়ে রাখা যায় তবে দর্শক এর জন্য একটা টানটান থ্রিল গল্প অপেক্ষা করছে সিনেমার পর্দায় দেখার জন্য।
পীযূষ সাহার গল্প বোনার দক্ষতা বরাবরই অসাধারণ। লাস্ট কিছু বছর ধরে যে রকম কমার্শিয়াল সিনেমা হচ্ছে তার থেকে বেরিয়ে এসে এইরকম জমজমাট টানটান একটা সিনেমা তৈরি করার জন্য পীযূষ সাহা কে সত্যি সাধুবাদ জানাতে হয়, উনি এই সিনেমায় বারংবার নিজেকে ভেঙেছেন , দেখিয়েছেন চেনা ছক ভাঙা জানতে হয়। গান/মিউজিক এর দিক থেকে বলতে বাম্পার পলিসি আর পিয়া জাগো দর্শক এর মনে জায়গা করে নিতে বাধ্য, আর সেটা করেছে ও ।
Comments
Loading…